প্রত্যয় ডেস্ক: বেলজিয়ামের লিজ শহরে করোনায় আক্রান্ত চিকিৎসকদের চিকিৎসাসেবা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশটিতে করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে এবং হাসপাতালগুলোতেও এর প্রভাব দেখা যাচ্ছে।
দেশটির এক চতুর্থাংশ মেডিকেল স্টাফ বর্তমানে কোভিড-১৯ সংক্রমণে ভুগছেন। ফলে ১০টি হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ তাদের স্টাফদের কাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। করোনায় আক্রান্ত যেসব স্টাফের দেহে করোনার লক্ষণ দেখা যায়নি তাদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। বেলজিয়াম অ্যাসোসিয়েশন অব মেডিকেল ইউনিয়নসের প্রধান ডা. ফিলিপ ডেভোস জানিয়েছেন, তাদের কাছে আর কোনো উপায় নেই। এমন পদক্ষেপ না নিলে কয়েকদিনের মধ্যে চিকিৎসা ব্যবস্থা ধসে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। রোগীদের মধ্যে ভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কার বিষয়টি উড়িয়ে দেননি ডা. ফিলিপ ডেভোস। তিনি এ বিষয়ে অবগত আছেন।
বেলজিয়ামের পূর্বাঞ্চলীয় শহরের প্রতি তিনজন মানুষের নমুনা পরীক্ষায় একজনের করোনা পজিটিভ ধরা পড়ছে। হাসপাতালগুলোতে অনেক রোগীকে ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে। এছাড়া অপ্রয়োজনীয় সার্জারিও বন্ধ রাখা হয়েছে। মাত্র কয়েকদিন আগেই দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফ্রাংক ভান্দেনব্রুক সতর্ক করেছেন যে, তারা করোনা সুনামির কাছাকাছি রয়েছেন। যা ঘটতে যাচ্ছে তা কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। শুধুমাত্র বেলজিয়ামেই নয়, পুরো ইউরোপজুড়েই করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। বিভিন্ন দেশে হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। বেশিরভাগ দেশই এই গ্রীষ্মকে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারেনি। সে কারণেই এখন তাদের ভুগতে হচ্ছে। অনেক দেশই এখন আবার নতুন করে কড়াকড়ি ও বিধি-নিষেধ জারি করতে বাধ্য হয়েছে।
ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রেস্টুরেন্ট-বার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কারফিউ ও জরুরি অবস্থাও জারি করেছে বেশ কিছু দেশ। তবে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ইউরোপে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে স্পেন। করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কারফিউয়ের পাশাপাশি দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। ইউরোপে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, বাড়িতে অবস্থানের নির্দেশ এবং প্রয়োজনে আবারও লকডাউন জারির পরামর্শ দিয়েছেন সংস্থাটির কর্মকর্তারা।
এদিকে, বেলজিয়ামে করোনার বিস্তার ঠেকাতে সব ধরনের রেস্টুরেন্ট ও বার বন্ধ রাখা হয়েছে। এছাড়া মধ্যরাত থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে। এছাড়া জার্মানি, ফ্রান্স, স্পেন, নেদারল্যান্ডস, পোল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন করে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।